শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ০২:৪৪ পূর্বাহ্ন
বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার কাজীরহাট থানা আওয়ামীলীগ কার্যালয় লুট, দখল করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় সাংসদ পংকজ নাথ-এমপি ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি থানা আওয়ামীলীগকে ১৭ই মার্চ-২০২০ মুজিব শতবর্ষ পালন করতে দিবে না মর্মে হুমকি দেয়ায় অভিযোগও উঠেছে।
সোমবার (১৬ মার্চ) বেলা ১২টায় বরিশাল রিপোর্টাস ইউনিটির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এমন অভিযোগ করেন কাজীরহাট থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব আঃ জব্বার খান।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে কাজীরহাট থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব আঃ জব্বার খান বলেন, বরিশাল (৪) হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ ও কাজিরহাট আসনের সংসদ সদস্য পংকজ নাথ সংগঠনের গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে বিতর্কিত একের পর এক অসাংগঠনিক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রধান মন্ত্রী হাসিনার নির্দেশ পর্যন্ত তিনি উপেক্ষা করছেন। গায়ের জোরে যখন তখন যাকে তাকে মনগড়া কমিটি তৈয়ার করে তাহার মাধ্যমে সংগঠন চালাচ্ছে। বরিশাল জেলা আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠন কর্তৃক অনুমোদীত কমিটি না মেনে সকল সংগঠনের একটি ছায়া কমিটি তৈয়ার করে ওটাকেই মূল কমিটি হিসাবে চালিয়ে যাচ্ছেন। ভাবখানা এরকম সংগঠন যেন তার পৈত্রিক সম্পত্তি। তিনি আরো বলেন, পংকজ নাথ এমপি ইতিপূর্বে শেখ হাসিনা মনোনীত হিজলা ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নৌকা মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থীদেরকে পরাজিত করে তার নিজের দালালদেরকে চেয়ারম্যান করেছেন।
এছাড়া বিগত ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতিকের আট জন ইউপি চেয়ারম্যানকে প্রত্যক্ষ বিরোধীতার মাধ্যমে পরাজিত করেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের ইতিহাসের সব চেয়ে গৌরবময় অধ্যায় মুজিব শতবর্ষ পালন উপলক্ষ্যে আমরা কাজিরহাট থানা আওয়ামীলীগ জেলা আওয়ামীলীগের নির্দেশনা মোতাবেক ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহন করেছিলাম।
ইতিমধ্যে আমরা পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন টানানোসহ দাওয়াত কার্ড বিতরণ শেষ করেছি। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মোতাবেক আমরা সংশোধীত আকারে কর্মসূচী গ্রহন করে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। এরই মধ্যে মহান মুজিব শতবর্ষ শুরুর একদিন পূর্বে গত রোববার বিকেলে সাড়ে ৫ পংকজ নাথের নির্দেশে আওয়ামীলীগ থেকে বহিস্কৃত ও দলীয় শৃংখলা ভংগের অভিযোগে অভিযুক্ত বিদ্রোহী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ.কে.এম মাহফুজুল আলম লিটনের নেতৃত্বে দল থেকে বহিস্কৃত কাজী শহীদ ও মনিরুল ইসলাম হাওলাদারের নেতৃত্বে একটি সন্ত্রাসী দল কাজিরহাট থানা আওয়ামীলীগের কার্যালয়ের তালা ভেংগে ভেতরে প্রবেশ করে অফিসে নতুন তালা ঝুলিয়ে দেয়। অফিসের আসবাব পত্র ভাংচুর সহ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এবং নেত্রীর ছবি ভাংচুর করিয়া খালে ফেলে দেয় ও গুরুত্ব পূর্ণ কাগজপত্র ও একটি এলইডি টিভি নিয়েযায়। লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, কাজিরহাট থানা আওয়ামীলীগ কার্যকরি কমিটি বহাল থাকার পরেও পংকজ নাথের নির্দেশে বহিস্কৃত আওয়ামীলীগ নেতা ও বিদ্রোহী উপজেলা চেয়ারম্যান এ.কে.এম মাহফুজুর আলম লিটন-কে সভাপতি করে একটি স্বঘোষিত কমিটি ঘোষনা করে। যাহা জেলা আওয়ামীলীগ আদৌ জানানেই। শুধু তাই নয় মুজিব শতবর্ষ পালন উপলক্ষ্যে যখন দলীয় নেতা কর্মীরা উদগ্রীব, ঠিক সেই সময় পংকজ নাথ সন্ত্রাসীদের দিয়ে বাড়ী বাড়ী গিয়ে নেতা কর্মীদের হুমকি ও মারধর করছে।
পংকজ নাথ এর নির্দেশে জয়নগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের আহবায়ক ও কাজিরহাট থানা কমিটির সহ-সভাপতি, গত ইউপি নির্বাচনে আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থীকে রাতে তার বাড়ীতে গিয়ে অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করে ও অবরুদ্ধ করে রাখে। আর এসব কিছুই করছে প্রশাসনের ছত্র ছায়ায়। প্রশাসনের ছত্র-ছায়ায় আওয়ামীলীগের ত্যাগী নেতা কর্মীদেরকে মুজিববর্ষ পালন থেকে বিরত রাখতে সকল কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, কাজিরহাট থানার আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি অধ্যাপক সেকান্দার আলী জাফর, সহ সভাপতি হারুন অর রশিদ, কাজী ইউসুফ হোসেন, সিনিয়র সহ সভাপতি মোঃ ইউসুব হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ জিল্লুর রহমান মিয়া, সহ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শ্রী সঞ্জয় চন্দ্র শীল, সদস্য জুয়েল আহম্মেদ। এ বিষয়ে বরিশাল-৪ আসনের সাংসদ পঙ্কজ নাথ-এমপি এ বিষয়ে কিছুই তিনি জানেন না বলে জানিয়েছেন। পাশাপাশি স্থানীয় আওয়ামীলীগের মধ্যে কোন কোন্দল না থাকলেও কেন যে ধরণের অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তাও তার বোধগম্য নয়। এ ধরণের একটি অভিযোগ রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার অপপ্রয়াস।